বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) দুপুরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈচনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈচনা গ্রামের বাসিন্দা। মৃত্যু বৃদ্ধ’র ছেলে ওলিউল ইসলাম জানান, করোনা উপসর্গ নিয়ে বাড়িতে অসুস্থ বৃদ্ধ পিতার চিকিৎসা চলছে। জরুরী অক্সিজেন প্রয়োজন। সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আল ফেরদৌস আলফার কাছ থেকে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিলাম।বৃহস্পতিবার সকাল দশটার দিকে শহরের ইটাগাছা হাটের মোড়ে পৌঁছালে তাকে আটক করেন ইটাগাছা ফাঁড়ির এএসআই সুভাষ চন্দ্র।
লকডাউনে বাইরে বেরিয়েছে বলে তার কাছে এক হাজার টাকা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় তাকে দু’ঘন্টা সেখানে আটকে রাখা হয়। পরে ইটাগাছা এলাকার জনৈক জিয়াউল ইসলামের মধ্যস্থতায় ২’শ টাকা নিয়ে এএসআই সুভাষচন্দ্র তাকে ছেড়ে দেন। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেছে। বাড়িতে যেয়ে দেখি অক্সিজেনের অভাবে আমার পিতা মারা গেছেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, যদি সময় মতো অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বাড়িতে যেতে পারতাম তাহলে হয়তো আমার পিতাকে বাঁচানো যেত। তিনি এই অমানবিক ঘটনার বিচার দাবি করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইটাগাছা পুলিশ ফাড়ির একাধিক পুলিশ সদস্য বলেন, সুভাষের কারণে পুলিশের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। এলাকার যত জমা-জমির ঝামেলা আছে সেগুলোর মধ্যে সে মাথা দেয়। অনেকে তাকে ল্যান্ড সুভাষ নামে চেনেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইটাগাছা পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই সুভাষচন্দ্র বলেন, বেপরোয়া গতিতে আসছিল মোটরসাইকেলটি। কাগজপত্রও ছিলনা। পরে ঘটনা শুনে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মাত্র ২/৩ মিনিট মোটরসাইকেলটি থামিয়ে রাখা হয়েছিল। তিনি এ সময় নিউজটি না করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে এবারের মতো তাকে মাফ করে দেয়ার অনুরোধ করেন।
১হাজার টাকা দাবি করা এবং ২শ টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। তার সাথে আমার টাকা-পয়সা নিয়ে কোন কথা হয়নি।
ইটাগাছা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ ইন্সপেক্টর তারেক আজিজ বলেন, আসলে আমিও বিষয়টা পরে শুনেছি। এনিয়ে আমাদের সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্যার, ওসি স্যার আমরা সবাই এ বিষয়টা নিয়েই এখন পর্যন্ত আছি।
তিনি আরও বলেন, আসলে ওনার অন টেস্ট গাড়ি ছিলো তো এজন্য আটকানো হয়েছিলো। পরে ওনার বাবার কথা শুনে ওনাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিলো। আর দুই ঘণ্টা আটকানোর যে কথা উঠেছে প্রত্যক্ষদর্শীরা আমাকে বলেছে যে না সর্বোচ্চ তাকে ১৫ মিনিট আটকানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)দেলোয়ার হুসেন কিছুই জানেন না উল্লেখ করে বলেন, ঘটনা সম্পর্কে আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি। এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শামসুল হক বলেন, তদন্ত করে যদি ঘটনার সত্যতা পেলে অভিযুক্ত এএসআই সুভাষ চন্দ্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সজিব খান বলেন, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। অভিযুক্ত এএসআই সুভাষ এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।