এম.এ হান্নান; বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর বাউফলে শপিংমল, মার্কেট হাটবাজার গুলোতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ মানা হচ্ছে না। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে হরদমে চলছে এসব অপ্রয়োজনীয় দোকান পাট।
অভিনব কৌশলে শাটার অর্ধখোলা রেখে চলছে বেঁচা-কেনা। অনেকে আবার দোকানের বসিয়েছে পাহারা।এ যেনো চোর-পুলিশ খেলা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আসলে দোকান বন্ধ, চলে গেলে খোলা। অপরদিকে বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করতে মাঠে রয়েছে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনা বাহিনী। অব্যাহত রয়েছে মোবাইল কোট পরিচালনা, চেকপোস্ট ও টহল।
সরেজমিনে কঠোর বিধিনিষেধের নবম তম দিনে (শুক্রবার) দেখা যায়, বাউফল পৌর শহরের হাচন দালাল মার্কেট, নুরিয়া মার্কেট,মোকলেছ ভবন, জালাল প্লাজায় গার্মেন্টস, কসমেটিকস, ইলেকট্রনিকসহ বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় দোকান পাটে চলছে বেঁচাকেনা। দোকান গুলোর শাটার রয়েছে অর্ধখোলা। এছাড়াও উপজেলার বৃহৎ বানিজ্যিক বন্দর কালাইয়া, বগা ও কালিশুরী বন্দরসহ ৪৪টি হাটবাজারে বিধিনিষেধ ভঙ্গ করে খোলা রয়েছে দোকান অপ্রয়োজনীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামীণ সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধ শতাধিক হাট-বাজার। ওই সকল হাট-বাজারগুলোতে মোটেই স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না। আগের মতোই সব্জি ও মাছের দোকানগুলো গাদাগাদি করে বসায় ক্রেতারা ভীর করে কেনাকাটা করছেন। অথচ বিধিনিষেধ অনুযায়ী খোলা মাঠে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে দাকান খুলে বেচাকেনার নিয়ম রয়েছে। ক্রেতাদের অনেকের মুখেই মাস্ক নেই। কিছু লোকের মাস্ক থাকলেও সেটা পকেটে ভরে রাখা হয়েছে। চায়ের দোকানের আড়ালে কিছু মুদি মালামাল তুলে দোকানীরা দোকান খোলা রাখছে। বাজারগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যতক্ষণ অবস্থান করেন ততক্ষণ কিছু দোকান বন্ধ থাকে। চলে গেলেই আবার খুলে বেচাকেনা শুরু হয়। সাধারন মানুষের মাঝে নেই বিন্দুমাত্র সচেতনতা।
মো. নাছির উদ্দিন হেলালী নামের এক সব্জি ক্রেতা বার্তাবাজারকে বলেন,‘ কঠোর লকডাউন পালিত হচ্ছে অথচ কাঁচাবাজার ও মাছ বাজারে স্বাস্থবিধি মানা হচ্ছে না। কোন প্রকার মনিটরিংও নেই।
কালাইয়া রব্বানিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ.এস.এম আবদুল হাই বলেন, মানুষকে ঘরে রাখতে প্রতিনিয়িত মাইকিং করাসহ প্রশাসনকে আরো কঠোর হওয়া দরকার। অন্যথায় করোনার এই ঢেউ প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে যাবে। একই মন্তব্য করেছেন বাউফলের সচেতন মহল।
উপজেলা প্রশাসনের সূত্র মতে, কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আনচিুর রহমান বালির নেতৃত্বে দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিধিনিষেধ ভঙ্গের দায়ে শুক্রবার পর্যন্ত ১৮৫টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৫৯হাজার ১৫৪টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সহকারি কমিশনার আনিচুর রহমান বালি বলেন,‘ কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করতে মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। লকডাউনের নবম দিনে বিধিনিষেধ ভঙ্গের দায়ে ১৮টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৬হাজার ২শ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাকির হোসেন বলেন,‘ মানুষকে ঘরে রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। যারা বিধিনিষেধ ভঙ্গ করছে তাদের জরিমানা করা হচ্ছে। এছাড়াও লকডাউনে কর্মহীন মানুষের বাড়িতে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছি।