তোফাজ্জল হোসেন,মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ
করনায় আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন কবি ও অধ্যাপক নুরুল হক। বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) বিকাল ৪টায় তিনি রাজধানী ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দি হাসপাতালের আইসিইউতে ৭৮ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
রাত দশ টার দিকে কবির ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলে রাব্বির সাথে কথা হলে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ছোট ভাই ফজলে রাব্বি জানান, আমার ভাইয়ের মরদেহ ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার মদন উপজেলার বালালী গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে। শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল ১০ ঘটিকার বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাযা শেষে বালালী গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাল লাশ দাফন সম্পন্ন হবে।
এদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ৪ জুলাই শহীদ সোহরাওয়ার্দি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন গুণী কবি ও অধ্যাপক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক।
কবি নুরুল হকের মৃত্যুতে নেত্রকোনা বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ও সাহিত্য সমাজে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নেত্রকোনার কবি, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিককর্মী এবং কবির ভক্তবৃন্দসহ স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে।
১৯৪৪ সালে নেত্রকোনার মদন উপজেলার বালালী গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন কবি নুরুল হক। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে একটি বামপন্থী গেরিলা বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে গৌরবোজ্জ্বল অবদান রাখেন। কর্মজীবনে কবি নুরুল হক পেশায় একজন শিক্ষক ছিলেন। ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন তিনি এবং দেশের বিভিন্ন সরকারি কলেজে শিক্ষকতা শেষে ২০০৫ সালে ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
ষাটের দশকের প্রতিভাবান কবি নুরুল হকের উল্লেখ্যযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ হল- 'সব আঘাত ছড়িয়ে পড়েছে রক্তদানায়,' 'একটি গাছের পদপ্রান্তে' 'মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত গল্প,' 'শাহবাগ থেকে মালোপাড়া,' 'এ জীবন খসড়া জীবন' এবং 'কবিতাসমগ্র' ও 'কবিতার দিকে একজন: শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়' ইত্যাদি।