দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের করা একটি বড় মাপের বিশ্লেষণে দাবি করেছে- ফাইজার বায়োএনটেকের ডাবল ডোজ টিকা করোনাভাইরাসের নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন সংক্রমণের বিরুদ্ধে মাত্র ৩৩ শতাংশ কাজ করে। তবে টিকাটির ডাবল ডোজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া থেকে ৭০ শতাংশ রক্ষা করে।
যে অঞ্চলে নতুন ভেরিয়েন্টটি প্রথম দেখা দিয়েছিল, সেখানে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার প্রথম বৃহৎ আকারের বিশ্লেষণটি করা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওমিক্রন সহজেই সংক্রমণযোগ্য। ফাইজার টিকা ওমিক্রন সংক্রমণের বিরুদ্ধে রক্ষা করতে ততটা কার্যকর নয়, যতটা এটি ডেল্টার বিরুদ্ধে ছিল।
বিশ্লেষণটি দুই লাখ ১১ হাজারটিরও বেশি পজিটিভ কভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে করা হয়। ৪১ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে- যারা ফাইজার ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নিয়েছেন। ১৫ নভেম্বর থেকে ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে এই পজিটিভ কভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফলের মধ্যে, যার প্রায় ৭৮ হাজার ছিল ওমিক্রন রোগী।
গবেষণাটি দক্ষিণ আফ্রিকার বৃহত্তম বেসরকারি স্বাস্থ্য বীমাকারী ডিসকভারি হেলথ এবং দক্ষিণ আফ্রিকান মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল দ্বারা পরিচালিত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বতসোয়ানার বিজ্ঞানীরা নভেম্বরে ওমিক্রন প্রথম ঘোষণা করার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে গবেষণাটি করা হয়েছে। গবেষকরা বলেন, ফলাফলগুলো প্রাথমিক এবং সমকক্ষ পর্যালোচিত নয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার ওমিক্রন তরঙ্গের প্রথম তিন সপ্তাহ থেকে ডাটা সংগ্রহ করা হয়েছে। যা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম দেশ যেখানে ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট করোনা সংক্রমণকে বাড়িয়ে দিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা দ্রুত সামাজিক সংক্রমণ হয়েছে। যার প্রমাণ সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ গাউতেং।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মতে, দক্ষিণ আফ্রিকায় দৈনিক নতুন আক্রান্তের সাত দিনের রোলিং গড় গত দুই সপ্তাহে বেড়ে ২৯ নভেম্বর প্রতি এক লাখে ৮.০৭ থেকে ১৩ ডিসেম্বর প্রতি এক লাখে ৩৪.৩৭ হয়েছে। তবে, একই সময়ে মৃত্যুহার বাড়েনি।
ডিসকভারি হেলথের প্রধান নির্বাহী ডা. রায়ান নোচ বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার জিনোমিক সার্ভেইল্যান্সের নেটওয়ার্ক দুর্দান্ত জেনেটিক নজরদারি শনাক্ত করেছে যে, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৯০ শতাংশ নতুন সংক্রমণের জন্য দায়ী ওমিক্রন। এটি প্রভাবশালী ডেল্টাকেও হার মানিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ওমিক্রন তরঙ্গে পূর্বের তরঙ্গের তুলনায় 'তীর্যক গতিপথ' রয়েছে। জাতীয় ডাটা এই তরঙ্গের প্রথম তিন সপ্তাহের মধ্যে নতুন সংক্রমণ এবং পরীক্ষায় পজিটিভের হার- উভয়েরই একটি সূচকীয় বৃদ্ধি দেখায়। যা সংক্রমণের দ্রুত সামাজিক সংক্রমণের সঙ্গে একটি অত্যন্ত সংক্রমণযোগ্য ভেরিয়েন্ট হিসেবে প্রমাণ করে।
সূত্র : আউটলুক